জিগাতলার একটি জনবহুল গলিতে থাকেন মোহাম্মদ বাদল। মধ্যবয়সী এই মানুষটি জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন একটি বেসরকারি অফিসে। জীবনের প্রায় পুরোটাই কাটিয়েছেন কিভাবে পরিবারকে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের রাখা যায়। সন্তানদের লেখাপড়া, স্ত্রীর প্রয়োজন, বাবা-মায়ের সেবা সবকিছুর জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়।

বয়স ৬০ কোঠায় আসতেই অবধারিতভাবে চাকরি জীবনের সমাপ্তি হল। অবসরে উনার আর কোন কর্মব্যস্ততা নেই। তিনি এখন বাড়িতে বসে পরিবারের সাথে সময় পার করেন।

প্রথম প্রথম বেশ  ভালোই লাগত। জীবনে টিকে থাকার জন্য, পরিবারের আয়েশের জন্য দীর্ঘদিন আরাম নিতে পারেন নি। দীর্ঘদিন পর পরিবারের সাথে সময় কাটানো, নাতি-নাতনিদের সাথে খেলা করা সবই ভালো লাগছিলো। কিন্তু মাঝে মাঝেই মনে হতো, “এভাবে শুধু বসে থাকলে তো হবে না। পরিবারের পাশে একটু আর্থিক সাপোর্ট দরকার, নিজেকেও কিছু একটা করে ব্যস্ত রাখা দরকার।”

একদিন সকালে চা খেতে খেতে হঠাৎ মাথায় একটা আইডিয়া এলো। “বাসার পাশেই যদি একটা ছোট্ট মুদি দোকান দিই, তাহলে একদিকে যেমন কিছু আয় হবে, তেমনি সারাদিন কিছু না কিছু কাজ থাকবে। পাড়ার লোকজনের সাথেও দেখা হবে। একা একা লাগবে না মোটেই।”

তখন হাতে যা টাকা ছিল সেটা দিয়েই একটা মুদি দোকান দিলেন। প্রয়োজনীয় যা যা লাগে তার সবকিছু দিয়েই দোকানটা গুছিয়ে নিলেন অল্প সময়ের মধ্যেই। মহল্লার মানুষদের জন্য সুবিধাই হলো একে তো বাসার কাছেই দোকান তার উপর বাদল ভাইকে সবাই চেনে-জানে। দোকানটা হওয়ার পরে পরিবারের সবাই যখন যেমন সময় পায় হেল্প করে। সবমিলিয়ে বেশ ভালোই চলতে লাগলো।

দোকানে বেচা-কেনা ভালো থাকা সত্ত্বেও একটা ঝক্কিতে উনি প্রায়ই পড়ছিলেন। সেটা হলো পণ্য সংগ্রহের ঝামেলা। বিভিন্ন আড়ৎ আর পাইকারি বাজারে  ঘুরে ঘুরে কেনা বেশ কষ্ট তার উপর তার ছেলে যেদিন দোকানে না বসতে পারে সেদিন দোকানটা বন্ধ রেখেই বাজারে যেতে হয় পণ্য কিনতে। এছাড়া ঢাকার অসহনীয় জ্যাম আর উনার বয়স জনিত হাটু-পা ব্যাথায় এই পণ্য আনা-নেয়ার ঝামেলাটা উনাকে বেশ খিটখিটে করে তুলছিলো।  

“এই বয়সে ভারি পণ্য রিকশায় উঠানো নামানো, ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় কাটানো আসলেই খুব কষ্ট হতো,” বলেন বাদল ভাই। “এই বয়সে আবার ভিড়ের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি। সময়ও বেশি, খরচও বেশি পড়তো। রিকশা-অটো ভাড়া, দোকান বন্ধ করে রাখা দিনের অর্ধেক এর বেশি, সব মিলিয়ে ঝামেলায় হতো।”

তারপর একদিন দোকানে একজন লোক আসল প্রিয়শপের প্রতিনিধি হিসেবে। বাদল ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানতে পারলেন তার আসলে পণ্য সাপ্লাই নিয়ে কি কি সমস্যা। আর তাকে বললেন প্রিয়শপ কিভাবে মুদি দোকানিদের সাহায্য করছে।  এছাড়া কোথাও না যেয়েই দোকানে বসেই প্রিয়শপের অ্যাপ দিয়েই পণ্য অর্ডার করতে পারবেন। 

যেহেতু বাদল ভাই মোবাইল ফোন ব্যবহারে তেমনা পারদর্শী না তাই প্রথমে বাদল ভাই একটু চিন্তাতেই পড়ে গেলেন। তার উপর ডিজিটালি টাকা-পয়সার লেনদেন আর অনলাইনে অর্ডার এসব নিয়েই ভাবছিলেন অর্ডার দিবেন নাকি দিবেন না।  

কিন্তু প্রিয়শপের প্রতিনিধি ধৈর্য ধরে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে উনাকে বললেন সেদিনই অ্যাপ ব্যবহার করে পণ্য অর্ডার করতে তাহলে পরের দিনই উনার অর্ডারকৃত পণ্য চলে আসবে। 

প্রথম অর্ডারটি যখন পরের দিন প্রিয়শপের কর্মী দিয়ে গেল তখন বাদল ভাই আশ্বস্ত হলেন।  কারণ পণ্য ঠিক সময়মতো, সঠিক দামে তার দোকানে পৌঁছে গেছে কোন ঝামেলা ছাড়াই। 

এর পর থেকে বাদল ভাই হয়ে উঠলেন প্রিয়শপের নিয়মিত গ্রাহক। পণ্য তো দোকানে বসে পাচ্ছেনই সাথে প্রিয়শপ তাকে ক্রেডিট সুবিধা দিচ্ছে। এখন তিনি পণ্য অর্ডার করে যখন মুনাফা হয় তখন টাকা শোধ করে দেন। এটা তার ব্যবসা চালানোকে অনেক সহজ করে দিয়েছে।

বাদল ভাইয়ের দোকানের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো।  নিয়মিত পণ্য পান, দাম নিয়েও চিন্তা নেই, আর এই পণ্য আনা-নেয়াতে যে শারীরিক কষ্টটা হতো সেটা আর হয় না।  

বাদল ভাইয়ের নিজের মুখে: “এই বয়সে বিভিন্ন জায়গায় পণ্য কিনতে যাওয়ার ঝামেলাটা এখন আমার করতে হয় না। আবার খরচও কম হয়। রিকশা ভাড়া, সারা দিনের খরচ এসব আর নেই। আমি এখন প্রিয়শপের নিয়মিত কাস্টমার। তারা আমাকে ক্রেডিট সুবিধা দিয়েছে, যার মাধ্যমে আমার ছোট দোকানকে আস্তে আস্তে বড় করতে পারছি।”

তার গল্প প্রমাণ করে যে বয়স কোনো বাধা নয়, যদি পাশে থাকে সঠিক সহায়তা। প্রিয়শপের মাধ্যমে এখন বাংলাদেশের যে কোনো দোকানি সহজেই পণ্য কিনতে পারেন, খরচ বাঁচাতে পারেন, এমনকি সহজ শর্তে ক্রেডিট সুবিধাও পেতে পারেন।

প্রিয়শপ, প্রতিটি দোকানের সহায়তায় পাশে আছে সব সময়।