ঢাকার ব্যস্ততম একটি এলাকার “গ্রীন রোড”। মানুষের ভিড়, ছোট ছোট অসংখ্য গলি, ছোট বড় অনেক দোকান। এই কয়েকটা দোকানের মাঝেই রয়েছে পারভীনের ছোট্ট মুদি দোকান। বাইরে থেকে দোকানটি দেখতে বেশ সাধারণ। কিন্তু দোকানের ভিতরে যে নারীটি বসেন, তার জীবনের গল্পটা অসাধারণ।  

আসুন উনার গল্পটা শুনি

দৃঢ়চেতা দোকানি পারভীনের আরও পরিচয় আছে। তিনি একজন মা এবং একজন স্ত্রী। পরিবারের তিনটি মানুষ, সেই তিনটি মানুষের দায়িত্ব সামলে নিয়েছেন স্বামীর সীমিত আয়েই। কিন্তু, সময়ের সাথে সাথে বাড়ছিল খরচ। ছেলেটার পড়াশোনার খরচ, পরিবারে ছোটখাট চাহিদা আর বাড়তি প্রয়োজনের চাপে, পারভীন হয়ে যাচ্ছিলেন চিন্তিত।  


স্বচ্ছল ভাবে চলতে হলে, আরেকটু বড় স্বপ্ন দেখতে হলে পারভীনেরও কিছু একটা করতেই হবে। এটা বেশ তিনি বুঝতে পারছিলেন। এই ভাবনা থেকেই শুরু তার জীবনটা বদলের। 

শুরুটা ছিল ভয়, অনিশ্চয়তা ভরা তবে সাহসটুকু ও ছিল 

অল্প কিছু জমানো টাকা ছিল হাতে। টাকাটা অল্প হলেও পারভীনের কাছে সেটাই ছিল একটা বড় সম্পদ। সেই টাকা দিয়েই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন ছেলের নামে একটি ছোট মুদি দোকান খুলবেন।

“প্রথম প্রথম খুবই চিন্তা হচ্ছিলো, দোকানটা আসলেই শুরু করবো কিনা। কোন ভাবে পুঁজি শেষ হয়ে যায় তখন কি হবে? আশেপাশের সবাই কি বলবে? আমাকে দিয়ে আসলেই হবে?” বলছিলেন পারভীন। 

দোকানে মহিলা বসে এটা দেখেই, দোকানে মানুষ জন আসতো কম। তাই লাভও ছিল কম, তাই দোকানে ব্র্যান্ডের পণ্য দিয়ে সাজানো যাচ্ছিলো না। মানুষের একেক রকমের কথা তো ছিলই। তার উপরে সংসার সামলিয়ে, পাইকারি বাজারে প্রায়ই নিজেই যেয়ে ঘুরে ঘুরে পণ্য আনা, পুরোটাই শুরুতে ছিল বেশ কঠিন। 

কিন্তু তিনি একজন মা এবং স্ত্রী, তাকে ভেঙে পড়লে তো চলবে না! পারভীন একজন নতুন উদ্যোক্তা, তার চলার পথটা কঠিন হলেও উঠে দাঁড়াতে হবেই।

অনেকটাই কঠিন ছিল সেই দিনগুলো

শুরুর দিকে দোকানে পণ্য তোলাটাই ছিল পারভীনের জন্য সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা। একজন নারী হিসেবে একা একা পাইকারি বাজারে যাওয়া, ভারী মালামাল বেছে নেওয়া, দামাদামি করা প্রতিটা পদক্ষেপেই তাকে মুখোমুখি হতে হয়েছে নানা প্রশ্নের, কখনো সন্দেহের চোখের দৃষ্টির। 

দোকানের হিসাব-নিকাশ, পণ্যের দাম নির্ধারণ, স্টক ম্যানেজমেন্ট এসব তো তার কাছে ছিল একেবারেই অচেনা। ঘরের কাজ সামলানোর পাশাপাশি দোকান চালানো, প্রতিদিন কাস্টমারদের সামলানো, এই দুই রকমের দায়িত্বর মাঝে মাঝে তাকে কষ্ট দিতো খুব।

পারভীন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, “বাজার থেকে মাল আনা-নেওয়া, মানুষের নানা রকম কথা শোনা, সব মিলিয়ে কেমন যেন ছিল সব। কিন্তু আমার ছেলে আর স্বামী আমাকে সাহস দিয়েছে। তারা বলতো, ‘হচ্ছে তোমাকে দিয়ে, আরেকটু চেষ্টা করতে হবে আমাদের সবার।’ সেই কথাগুলোই আমাকে ভরসা দিতো।”

PriyoShop আসার পর: বদলে গেলো পারভীনের ব্যবসার চিত্র

একদিন আশেপাশের দোকানিদের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন PriyoShop B2B Marketplace and Smart Distribution সম্পর্কে।

প্রথমে পারভীন দ্বিধায় ছিলেন, তিনি অ্যাপ ব্যবহার করতে জানতেন না।

কিন্তু ছেলে মোরসালিন তাকে সাহায্য করে, আর পরে PriyoShop টিম দোকানে গিয়ে অ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম বোঝায়। এরপর থেকেই তার ব্যবসায় আসে বড় পরিবর্তন।

এখন তিনি:

তিনি বলেন আমি অ্যাপ ভালো বুঝি না, কিন্তু ছেলে সাহায্য করে। PriyoShop-এর টিমও অনেক সাহায্য করে। এখন আগের মতো কষ্ট করতে হয় না, দোকানও ভালো চলছে।”

সহজ ক্রেডিট সুবিধা: পুঁজি সংকটে নতুন স্বস্তি

দোকান একটু একটু করে এগোতে থাকলেও, পারভীনের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা ছিল পুঁজি নিয়ে। বিশেষ করে:

– ঈদ বা পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবের আগে

– মাসের শুরুতে যখন মানুষের হাতে টাকা থাকে

– স্কুল ওপেনিং এর সময় যখন খাতা-কলম-ব্যাগের চাহিদা বাড়ে

এইসব সময়ে একবারে বেশি স্টক করতে গেলে নগদ টাকার চাপ চলে আসতো। অনেক সময় কাস্টমার চাইতো কোনো একটা ব্র্যান্ডের পণ্য, কিন্তু তার কাছে টাকা না থাকায় সেটা রাখতেই পারতেন না। বিক্রির সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যেতো বেশির ভাগ সময়েই।

এই জায়গাটাতেই PriyoShop-এর ক্রেডিট সুবিধা পারভীনের জন্য দারুন কিছু সুযোগ নিয়ে এলো।

তিনি পাচ্ছেন প্রিয়শপ থেকে:

– লেনা-দেনা ও প্রতিদিনকার অর্ডার ঠিকঠাক ভাবে রাখার সুবিধা 

– ডিজিটাল ক্রেডিট লিমিট যেখানে কোনো জামানত ছাড়াই ব্যবসার জন্য পণ্য রিস পারেন

– লাভ হাতে পাওয়ার পর পরই আস্তে ধীরে টাকা পরিশোধ করার সুযোগ

এই তো গেল সুবিধা গুলো কি পাচ্ছেন। এখন পারভীনের জীবনটা কি সহজ হলো? হলো তো। কেমন সহজ হলো দেখি তো একটু। 

পারভীন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলেন, “আগে টাকার অভাবে অনেক সময় মাল তুলতে পারতাম না। মনটা খারাপ হতো। কাস্টমার চাইলেও দিতে পারতাম না। এখন PriyoShop-এর ক্রেডিট থাকার কারণে সেই ভয় কমে গেছে। ভালো বিক্রি হবে বুঝলেই আগে থেকে স্টক নিতে পারি। পরে বিক্রি থেকে ধীরে ধীরে টাকা শোধ করে দেই। এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা স্বস্তি।”

এই ক্রেডিট সুবিধা পারভীনের জন্য শুধু ফাইন্যান্স না এটা তার বিশ্বাস, বৃদ্ধি, আর নিরাপত্তার ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফলাফল: পারভীনের জীবনে দৃশ্যমান উন্নতি

PriyoShop-এর সাথে যুক্ত হওয়ার পর

সবচেয়ে বড় কথা তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন: “আমি পারি, আমি পারবো।”

পারভীনের মতো আরও হাজারো নারী আছেন

আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে হাজারো পারভীন, যারা একদিকে সংসার সামলায়, অন্যদিকে নিজের ছোট ব্যবসা দিয়ে পরিবারের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলে।

এরা শুধু দোকানি নয়, এরা আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড, পরিবারের স্বপ্নের কারিগর, এবং অদম্য উদ্যোক্তা।

PriyoShop নারী উদ্যোক্তাদের পাশে, সবসময়

PriyoShop দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, একজন নারী শক্তিশালী হলে শক্তিশালী হয় একটি পরিবার, একটি সমাজ এবং একটি দেশ।

তাই PriyoShop প্রতিদিন কাজ করছে:

পারভীনের মতো প্রতিটি নারী উদ্যোক্তার পথে PriyoShop থাকবে যে কোনো প্রয়োজন, যে কোনো সময়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *